২০০ ডলারের লোক্যালি প্রোডিউসড ইয়াসিন-১০৫ আরপিজি, যা কিনা রুশ ট্যান্ডম-৮৫ আরপিজির উপর বেস করে তৈরী করা...এর সামনে সাড়ে তিন মিলিয়ন ডলার সমমূল্যের বিভিন্ন ভার্সনের মারকাভার অসহায়ত্ব দেখার মত। সর্বোচ্চ দেড়শ' মিটার দূর থেকে ছোড়া সম্ভব হলেও ক্লোজ কোয়ার্টার কম্ব্যাটে এর পিনপয়েন্ট হিট প্রোব্যাবলিটি, এক্যুরেশি, ড্যামেজ অতুলনীয়।

ট্যাংকের আউটার সাইডের ডাবল স্টিলের রোল্ড হোমোজিনিয়াস আর্মার, মড্যুলার কম্পোজিট আর্মার, সিরামিক স্টিল নিকেল প্লেট কম্পোজিট সম্বলিত ক্লথ ম্যাট্রিক্স আর্মার ভেদ করে ইন্টারনাল সলিড আয়রন আর্মারের ৬০ সেন্টিমিটার ভেতরে পেনেট্রেট করার ক্যাপাবিলিটি রয়েছে হা মা সে র তৈরী এই আরপিজির।
অথচ, মারকাভাতে রয়েছে বিশ্বের অন্যতম সেরা কাউন্টারমেজার; যার নাম ট্রফি প্রটেকশন সিস্টেম। যা এতটাই অ্যাডভান্সড যে ড্রোন থেকে ড্রপাবেল কোনো অ্যামুনেশন কিংবা আরপিজি, এটিজিএম ডিজেবল করে দিতে পারে মুহূর্তেই। অথচ দিনশেষে ব্যাটেলগ্রাউন্ডে কিছুই কাজে আসছেনা।
এগুলো দেখলে মাথায় আসে সূরা আনফালের সেই ১৭ নাম্বার আয়াত। যেখানে আল্লাহ তা'য়ালা বলেন—
 فَلَمۡ تَقۡتُلُوۡهُمۡ وَ لٰکِنَّ اللّٰهَ قَتَلَهُمۡ ۪ وَ مَا رَمَیۡتَ اِذۡ رَمَیۡتَ وَ لٰکِنَّ اللّٰهَ رَمٰی ۚ وَ لِیُبۡلِیَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ مِنۡهُ بَلَآءً حَسَنًا ؕ اِنَّ اللّٰهَ سَمِیۡعٌ
“তোমরা তাদেরকে হত্যা করনি বরং আল্লাহই তাদেরকে হত্যা করেছেন। আর তুমি নিক্ষেপ করনি যখন তুমি নিক্ষেপ করেছিলে; বরং আল্লাহই নিক্ষেপ করেছেন এবং যাতে তিনি তাঁর পক্ষ থেকে মুমিনদেরকে পরীক্ষা করেন...উত্তম পরীক্ষা। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ”



ব্যাপক সাফল্যের কারণে আলোচনায় হামাসের তৈরি আল ইয়াসিন-ওয়ান জিরো ফাইভ রকেট। ইসরায়েলের স্থল অভিযানে এই অ্যান্টি ট্যাংক সমরাস্ত্র ব্যবহার করেই বেশকিছু অত্যাধুনিক ট্যাংক ধ্বংস করেছে হামাস যোদ্ধারা। তেলআবিবের সমরযান ধ্বংসের ভিডিও প্রকাশের পর থেকেই স্বল্প পাল্লার আল ইয়াসিন রকেটের সক্ষমতা নিয়ে হচ্ছে চর্চা। চলমান যুদ্ধেই প্রথমবার হামাসকে এই রকেট ব্যবহার করতে দেখা গেছে। খবর আনাদুলু এজেন্সি’র।

ইসরায়েলের স্থল অভিযানে শক্ত প্রতিরোধের দাবি ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের। বেশকয়েকটি ইসরায়েলি ট্যাংক ধ্বংসের ভিডিও প্রকাশ করেছে সংগঠনটি। প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, যে সমরাস্ত্র ব্যবহার করে ইহুদি সেনাদের ট্যাঙ্ক ধ্বংস করা হচ্ছে তার নাম আল ইয়াসিন ১০৫এমএম অ্যান্টি ট্যাংক রকেট।

চলমান যুদ্ধে এখন পর্যন্ত তেলআবিবের ৩০টিরও বেশি ট্যাংক ধ্বংস করার দাবি সংগঠনটির সামরিক শাখা কাসেম বিগ্রেডের। অনেকের মতে, তাদের দাবি অতিরঞ্জতি হলেও, স্থল অভিযানে ইসরায়েলের ক্ষয়ক্ষতিও কম নয়। কেউ কেউ বলছেন, এবারই তেল আবিবের সবচেয়ে বেশি ট্যাংক ধ্বংস করেছে হামাস।

বেশ কয়েকবছর ধরেই ইসরায়েলের অত্যাধুনিক মারকাভা ট্যাংক ধ্বংসের জন্য অস্ত্র তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছিলো কাশেম বিগ্রেড, যার ফল আল ইয়াসিন-১০৫। অস্ত্র বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই রকেট রাশিয়ার ট্যান্ডেম ৮৫ এর পরিবর্তিত সংস্করণ। আল আকসা ফ্লাড অভিযানে প্রথমবার নিজেদের তৈরি ১০৫ মিলিমিটারের ইয়াসিন রকেট ব্যবহার করছে হামাস যোদ্ধারা।

২০০৯ সালে, হামাস প্রথমবার রুশ সমরাস্ত্র ট্যান্ডেম ৮৫ রকেট ব্যবহার করেছিলো। পাঁচবছর পর রাশিয়ার তৈরি এই ট্যান্ডেমের আরও একটি উন্নত সংস্করণ দিয়ে ইসরায়েলের নয়টি সমরযান ধ্বংস করে তারা। এরপর নিজেরাই, শুরু করে এই রকেটেরই আরও আধুনিক সংস্করণ তৈরির কাজ।

আরপিজি লঞ্চারের মাধ্যমে নিক্ষেপ করা যায় স্বল্পপাল্লার এই রকেট। বিস্ফোরিত হয় দুই ধাপে। প্রথম বিস্ফোরণের মাধ্যমে ট্যাংকের ভেতরে ঢোকার রাস্তা তৈরি হয়, রকেটের বাকি অংশ এরপর ভেতরে ঢুকে ঘটায় দ্বিতীয় বিস্ফোরণ। ধারণা, সর্বোচ্চ ৫০০ মিটার পর্যন্ত দূরের লক্ষ্যব্যস্তুতে আঘাত হানতে পারলেও এটি সবচেয়ে কার্যকর দেড়শ মিটারের মধ্যে। হামাসের দাবি, মারকাভা ট্যাংক ধ্বংসে উল্লেখযোগ্য সাফল্য পেয়েছে তাদের এই সমরাস্ত্র।

অবরুদ্ধ গাজায় নানা বিকল্প উপায় ব্যবহার করে এসব রকেট তৈরির সরঞ্জাম সংগ্রহ করে হামাস। পানি ও গ্যাস পাইপ ব্যবহৃত হয় কাঁচামাল হিসেবে। এছাড়া, টানেল ব্যবহার করেও মিসর, লেবানন থেকে বিভিন্ন যন্ত্রাংশ সংগ্রহ করা হয়। গোষ্ঠীটির প্রতিষ্ঠাতা শেখ আহমেদ ইয়াসিনের নামে নামকরণ করা হয়েছে আলোচিত এই রকেটের।


قُلۡ یٰقَوۡمِ اعۡمَلُوۡا عَلٰی مَکَانَتِکُمۡ اِنِّیۡ عَامِلٌ ۚ فَسَوۡفَ تَعۡلَمُوۡنَ ۙ مَنۡ تَکُوۡنُ لَهٗ عَاقِبَۃُ الدَّارِ ؕ اِنَّهٗ لَا یُفۡلِحُ الظّٰلِمُوۡنَ 
"তোমরা অচিরেই জানতে পারবে, কার পরিণাম মঙ্গলময়। যালিমরা কখনও সফল হবে না।"
(সূরাঃ আনআম ৬ : ১৩৫)